যুবসমাজ ও অপসংস্কৃতি - প্রবন্ধ রচনা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

যুবসমাজ ও অপসংস্কৃতি

যুবসমাজ ও অপসংস্কৃতি

* অপসংস্কৃতি ও আমাদের যুবসমাজ[ য. বো, ২০১০ |

*যুব সমাজের অবক্ষয় ও প্রতিকার| সি. বো, ২০০২ |

ভূমিকা : যুবসমাজ দেশের সবচেয়ে অগ্রসর শক্তি; দেশের ভবিষ্যৎ। সমস্ত পশ্চাদপদতা, কুসংস্কার, অন্যায় ও জড়ত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করে যুবসমাজ। আদর্শে উদ্বুদ্ধ, প্রাণশক্তিতে ভরপুর, ব্রতে দীক্ষিত, সাহসে বলীয়ান, ত্যাগে মহীয়ান, স্বাস্থ্যে সমুজ্জ্বল যুবশক্তিই জাতীয় অগ্রগতির চালিকাশক্তি ।

যুবসমাজের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য : বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনে, উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের যুবসমাজ পালন করেছে গৌরবোজ্জ্বল দেশব্রতী ভূমিকা।

যুবজীবনে সাম্প্রতিক অবক্ষয় : দারিদ্র্য, অশিক্ষা, বেকারত্বের অভিশাপে বাংলাদেশের যুবসমাজ আজ দিশাহারা। জাতীয় নেতৃত্ব যুবশক্তিকে কাজে লাগাতে পরিচয় দিয়েছেন ব্যর্থতার। যুবসমাজের সামনে কোনো স্বপ্ন নেই, আদর্শ নেই। আছে হতাশা, আছে ক্রোধ। এই হতাশা ও ক্রোধ জাতীয় জীবনের মূল্যবোধের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে। তাদের অনেকের চিন্তায়, মননে ও কর্মে পরিলক্ষিত হচ্ছে বিকারগ্রস্ততা। যুবসমাজের বড়ো অংশ বর্তমানে পথভ্রষ্ট, ব্রতচ্যুত এবং অপসংস্কৃতির শিকার।

যুবজীবনে অপসংস্কৃতির প্রভাব : পরিশীলিত মার্জিত উন্নত ও সুন্দর জীবনের সাধনাই সংস্কৃতি। যুবসমাজ সেই সংস্কৃতির সাধনা ও পথ থেকে বিচ্যুত। তারা অসুন্দর ও কলুষিত সংস্কৃতি তথা অপসংস্কৃতির শিকার। যুবসমাজের একটা বড়ো অংশকে সুকৌশলে করা হয়েছে আদর্শভ্রষ্ট। সুন্দর জীবনের পথ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্ধকার জীবনের পথে। তারা তলিয়ে যাচ্ছে নেশার জগতে, অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে মাদক নেশায়। বিপুলসংখ্যক তরুণের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে অস্ত্র, জড়িয়ে ফেলা হয়েছে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসমূলক কাজে। তারা লিপ্ত হচ্ছে অসামাজিক কাজে। হিংসাশ্রয়ী যৌনতামূলক চলচ্চিত্র, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পরিপন্থী বিকৃতরুচির নাচগান, রুচি বিগর্হিত পোশাক পরিচ্ছদের প্রতি তাদের আকৃষ্ট ও অনুরক্ত করার গভীর নীলনকশা ধীরে ধীরে কার্যকর করা হচ্ছে।

প্রতিকারের উপায় : যুবশক্তিকে বিপথগামিতা থেকে উদ্ধারের জন্যে প্রথমে চাই জাতীয় নেতৃত্বের সদিচ্ছা ও জাতীয় আন্দোলন। যুবশক্তির প্রাণপ্রাচুর্যময় বিকাশের জন্যে গড়ে তুলতে হবে অনুকূল আর্থ-সামাজিক- সাংস্কৃতিক- রাজনৈতিক পরিবেশ। দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মমুখী শিক্ষা প্রসার, ব্যাপক কর্মসংস্থান, বেকারত্বের অবসান ইত্যাদির জন্যে চাই ব্যাপক পরিকল্পনা, কর্মসূচি ও তার সফল বাস্তবায়ন। যুবসমাজকে অনুপ্রাণিত করতে হবে নতুন মূল্যবোধে । কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করতে হবে অপসংস্কৃতির বেসাতি।

উপসংহার : অপসংস্কৃতির কবল থেকে যুবসমাজকে রক্ষা না করলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। যুবশক্তির পুনরুজ্জীবনে চাই শুভ-সুন্দর জীবনবোধে নবতর দীক্ষা। সহানুভূতি ও মমত্ব দিয়ে তাদের পাশে জাতিকে দাঁড়াতে হবে। মনুষ্যত্বের বিকাশ ও মানবপ্রেমে ব্রতী করে যুবসমাজকে পরিচালিত করতে হবে সামাজিক অন্যায়-অবিচার, অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক শঠতার বিরুদ্ধে। তাদের উজ্জীবনী সংগীত হবে : ‘নবজীবনের গাহিয়া গান/ সজীব করিব মহাশ্মশান'।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ   যুবসমাজ ও অপসংস্কৃতি - প্রবন্ধ রচনা 

শিক্ষার্থীরা  আজকে আমরা জানলাম  যুবসমাজ ও অপসংস্কৃতি - প্রবন্ধ রচনা সম্পর্কে  । যদি আজকের এই  যুবসমাজ ও অপসংস্কৃতি - প্রবন্ধ রচনা টি ভালো লাগে তাহলে এখনি ফেসবুকে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন আর এই রকমই নিত্যনতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ । Search-Asked BD


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url